চাষীরা জানিয়েছেন, গত দুই বছরে পানে পচন রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। প্রতিশেধক ওষুধ প্রয়োগ করেও ফল পাচ্ছেন না। এছাড়া চলতি বছর প্রচণ্ড খরা ও গরমেও পানের ক্ষতি হয়েছে।
পান চাষীদের অভিযোগ, জেলার সম্ভাবনাময় একটি অর্থকরী ফসল হওয়া সত্ত্বেও পান চাষের উন্নয়নে এগিয়ে আসছে না কৃষি বিভাগ।
সদর উপজেলার যাদুপুর এলাকার পান চাষী ধুলু মোল্লা জানান,পান চাষ লাভজনক, কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পানে পঁচন রোগ দেখা দিয়েছে। ওষুধ দিয়েও কাজ হয় না, যে অবস্থা হয়েছে তাতে পান চাষ উঠে যাবে।
আরোক চাষী বদর আলী জানান, কৃষি অফিসের লোকজন মাঝে মধ্যে আসেন, তাদের পরামর্শে ওষুধ দেই; একটু কাজ হয়, কিন্তু আবার পচন দেখা দেয়। এ অবস্থায় আমরা হতাশ হয়ে পড়েছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেবে বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রায় ১৭ হেক্টর জমিতে পান চাষ হচ্ছে এবং এ থেকে বছরে ১৫ মেট্রিক টন পান উৎপন্ন হয়। এসব পান স্থানীয় চাহিদা পুরণ করে দেশের বিভিন্ন স্থানেও এখানকার পানের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
চাষী আব্দুর রাজাজাক বলেন, বছর দুই আড়াই থেকে পান বরজে, পান গাছে গোড়া পঁচন রোগ দেখা দিয়েছে। এতে পান গাছ মারা যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে প্রতিষেধক ওষুধ প্রয়োগ করেও ফল পাচ্ছিনা।
তিনি বলেন, পানে পঁচন রোগ, তার উপর এবার প্রচণ্ড খরা ও গরমেও পানের ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বরজে সেচ দিতে গিয়ে উৎপাদন খরচও বেড়ে গেছে। লাভজনক পান চাষ এখন ক্ষতির মুখে পড়েছে।
পান চাষী আব্দুল মালেক বলেন, আমরা অনেকে লোন করে আবাদ করি। আমাদের তো লোন পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু পানের পঁচন ঠেকানো যাচ্ছে না। এই নিয়ে আমা দুশ্চিন্তায় আছি।
চান চাষী সাইফুল ইসলাম অনু বলেন, এটি একটি অর্শকরি ফসল, বাপ দাদারা যেভাবে পান চাষ করেছে আমরা সেভাবেই চাষ করে আসছি। কৃষি বিভাগ যদি আমাদের প্রশিক্ষণ দিতো তাহলে আমরা আরো এগিয়ে যেতে পারতাম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত উপপরিচালক ড. মো. সাইফুল আলম বলেন, পান চাষে গোড়া পঁচন একটি সমস্যা। বর্ষাকালে এটি দেখা দেয়। এসময় যেন গাছের গোড়ায় পানি জমে না থাকে, গাছের গোড়া যেন পরিষ্কার রাখতে হয়। এছাড়া উপযুক্ত বালাইনাশক যেন দেয়া হয় এজন্য কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীরা চাষীদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
‘তবে এ বছর বৃষ্টিপাত তুলনামুলক কম থাকায় সমস্যা অনেকটা কম বলে জানালেন এই কৃষি কর্মকর্তা।’